আম আঁটির ভেঁপু

নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো…

সমকালীন বাংলা কমিউনিটি ব্লগ ভাবনা

বাংলা ব্লগের ইতিহাসঃ
বাংলা ভাষায় “বাঁধ ভাঙা আওয়াজ” স্লোগান নিয়ে প্রথম বাংলা কমিউনিটি ব্লগ “সামহোয়্যার ইন ব্লগের” যাত্রা শুরু।
২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২৬ মিনিটে ব্লগার দেবরার “ইমরান ব্লগ স্রষ্টা” শিরোনামে প্রথম পোস্টের মাধ্যমে শুরু হয় বাংলা কমিউনিটি ব্লগের অগ্রযাত্রা।

“ইমরান তুমি একটা ভাল কাজ করেছ, হাসিন ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনাদের জানাই আমাদের শুভু কামনা।”
এই দুই লাইন দিয়েই শুরু। মজার ব্যাপার পোস্টটিতে ১৮ ই জুলাই, ২০০৬ রাত ৮টা ০৭ মিনিটে প্রথম মন্তব্য পড়ে। মাঝখানে প্রায় সাত মাস! ব্লগার সারিয়া তাসনিমের মন্তব্য,” প্রথম পোস্ট অথচ মন্তব্য বিহীন ।
ভালো লাগছে প্রথম পোস্টে মন্তব্য করতে পেরে”।

“চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির” স্লোগান নিয়ে ২০০৭ সালের মে মাসে যাত্রা শুরু করে আরেকটি বাংলা কমিউনিটি ব্লগ “সচলায়তন”।

২২ অক্টোবর ২০০৮ সালে বাংলা কমিউনিটি ব্লগ জগতে আবির্ভাব হয় “প্রথম আলো ব্লগের”।
এভাবেই এগিয়েছে একটু একটু করে এগিয়ে চলেছে বাংলা ব্লগিং। কৈশোর পেরিয়ে রীতিমত যৌবনে পদার্পন। এখন অনেকটাই পরিনত হয়েছে বাংলা ব্লগিং। আমরাও ব্লগিং ধারনার সাথে নিজেদের একটু একটু করে গুছিয়ে নিয়েছি, মানিয়ে নিয়েছি।এই দীর্ঘ সময় পরে একটু যদি পিছন ফিরে তাকাই, গর্বে বুক ভরে যায় আমাদের। বাংলা ব্লগিংএ আমাদের অর্জন অনেক।অনেক অমিত সম্ভাবনা হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমাদের।

বাংলা ব্লগ দিবসঃ
আন্তর্জালের বিস্তৃত দুনিয়ায় এখন বেশ কয়েকটি বাংলা ব্লগ আছে। নতুনের তালিকায় আরো বাংলা ব্লগ আসছে। প্রতিটি ব্লগেরই নিজস্ব মতাদর্শ ও বিশ্বাস আলাদা, ব্লগারদের কাছে এদের জনপ্রিয়তার ধরনও আলাদা।মতাদর্শের হের-ফের থাকলেও বাংলা ভাষার চর্চা এবং বিশ্বজুড়ে মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় প্রকৃতপক্ষে সবার উদ্দেশ্য অভিন্ন। এই অভিন্ন ও সম্মিলিত বিশ্বাসকে সামনে রেখে এবং বাংলা ভাষাকে বিশ্বময় আরো ছড়িয়ে দেবার জন্যে গতবছর ১৯শে ডিসেম্বর,শনিবার, ২০০৯ পালিত হয় “বাংলা ব্লগ দিবস” ।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলা ব্লগঃ
১. প্রথম আলো ব্লগের নীতিমালার ৬ এর (ক) তে আছে, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে অবমাননা ও কটাক্ষমূলক কোনো লেখা প্রকাশ করা যাবে না”।

২. সচলায়তনের নীতিমালার প্রথম বাক্যতে আছে “সচলায়তন বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিসংগ্রাম ও অসাম্প্রদায়িকতার মতো বিষয়গুলিকে আক্রমণ করে লেখা পোস্ট, মন্তব্য বা অন্যান্য উপাদান সচলায়তন থেকে মডারেটরবৃন্দ যে কোন সময় অপসারণ করতে পারেন”।

৩. আমার ব্লগের নীতিমালার প্রথমেই আছে, “আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী কোনো প্রচারণা আমারব্লগ ডট কমে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”।
এভাবে বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোর নীতিমালায় গুলো দেখলেই বুঝা যায়, প্রতিটি ব্লগই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও শ্রদ্ধাশীল।

সচলায়তনের কথা আলাদা না করে বললেই নয়। কিছু আন্তর্জালিক দুঃষ্কৃতকারী মিথ্যা ও ভুলভাবে আন্তর্জালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরছে। সচলায়তন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে সাথে নিয়ে উইকিপিডিয়ায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঠিক ও নির্মোহ ইতিহাস রচনায় নেমে পড়েছেন “উইকিযুদ্ধ – মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখার সমবেত প্রয়াস”।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনমত গঠনঃ

সামহোয়্যার ইন ব্লগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে গন-স্বাক্ষর কর্মসূচী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য তারা তাদের প্রথম পৃষ্ঠায় একটি পিটশন ফরম ডাউনলোড সংযুক্তি দিয়েছেন।

আমার ব্লগের নীতিমালার শুরুতেই আছে, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপরীত যে কোনো প্রচারণা আমারব্লগ ডট কমে কঠোরভাবে দমন করা হবে”।
এছাড়া আমার ব্লগ ১৪ই ডিসেম্বরের দল (14december.org) কে সাথে নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে জনমত গঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

প্রথম আলো ব্লগে সে রকম প্রচেষ্টা দেখা না গেলেও, এর অনেক ব্লগারই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সময় পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন।

গনতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতাঃ
প্রথম আলো ব্লগের নীতিমালা ২ এ আছেঃ
ক) দেশীয় বা দেশের বাইরের কোনো জাতি, গোষ্ঠী, ভাষা ও ধর্মের প্রতি অবমাননামূলক বা কারো অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারে এমন কোনো লেখা প্রকাশ করা যাবে না।
খ) বিবদমান দুই বা ততোধিক জাতি, গোষ্ঠী ও ধর্মের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষের উস্কানি দিতে পারে এমন লেখা প্রকাশ করা যাবে না।
গ) ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্ম, সংস্কৃতি, আচার, জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস বা ভাষাকে কটাক্ষ বা অবমাননা করে কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
ঘ) প্রচলিত ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ অনুসারে শ্রদ্ধেয় কোনো ব্যক্তিকে হেয় করে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।
ঙ) কোনো জাতি, জনজাতি, গোষ্ঠী, জাতি-উৎস, লিঙ্গপরিচয়, বয়স, শ্রেণীপরিচয়, শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা নিয়ে ঘৃণা বা অবমাননামূলক কোনো মন্তব্য প্রকাশ করা যাবে না।
চ) ধর্মগ্রন্থের বাণী ত্রুটিপূর্ণভাবে উদ্ধৃত করা যাবে না। এমনভাবে ধর্মগ্রন্থের বাণী উদ্ধৃত করা যাবে না, যাতে ধর্ম বা বাণীর অসম্মান হয়।

সামহোয়্যার ইন ব্লগের নীতিমালায় আছে, “বাংলাদেশ অথবা যে কোন স্বীকৃত জাতি বা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইতিহাস, ধর্ম বিষয়ক সত্যকে অস্বীকার করে, বিরুদ্ধাচারণ করে, অসম্মান করে অথবা সত্যের অপলাপ বা অর্থহীন পোস্ট মুছে ফেলা হতে পারে এবং ব্লগারের ব্লগিং সুবিধা সাময়িক অথবা স্থায়ীভাবে স্থগিত কিংবা বাতিল করা হতে পারে”।

সচলায়তনের নীতিমালায় আছে “লেখকেরা যদিও স্বাধীন তথাপি, সচলায়তনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে জোরালো ভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে: ধর্মপ্রচার……সাম্প্রদায়িক / বর্ণবাদী / লিঙ্গবাদী / অবমাননাকর লেখা ও মন্তব্য……”

এভাবে নীতিমালা দেখলে আমরা একটা ধারনা পেতে পারি, কতটা অসাম্প্রদায়িক ও গনতান্ত্রিক আমাদের বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলো।

ব্লগারদের নৈতিকতা ও মনোবলঃ
সাম্প্রদায়িক, স্বাধীনতা বিরোধী ও জঙ্গীবাদী শক্তিগুলো বিভিন্ন সময় বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলো নিয়ে তাদের ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছিল। তাদের অপ-মতবাদগুলো বাংলা কমিউনিটি ব্লগের মাধ্যমে প্রচার ও প্রসারের অপ-প্রয়াস নিয়েছিল। অনেক সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ব্লগার মন ও মনজগতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তাদের এই অপ-প্রয়াস একাধিক নিক ফ্যাক্টারী নিয়ে কৌশোলে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েও গিয়ে ছিল। যেহুতু সামহোয়্যার ইন ব্লগ বাংলা কমিউনিটি ব্লগের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো ও বড় ব্লগ, তাই তাদের ষড়যন্ত্রের মূল কেন্দ্রবিন্দুই ছিল সামহোয়্যার ইন ব্লগ। কিন্তু স্বাধীনতমনষ্ক অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধপন্থি ব্লগারদের অদম্য প্রতিরোধে শেষ পর্যন্ত তারা অসফল হয়ে বরং বিছিন্নভাবে বিভিন্ন ব্লগে এই প্রয়াস ক্ষুদ্র পরিসরে এখনো চালিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ মাধ্যমের বিকল্প উৎসঃ
ব্লগের আবেদন নিছক সামাজিকতা ও বিনোদনকে ছাপিয়ে অনেক উপরে উঠে এসেছে। কালক্রমে বাংলা ব্লগগুলো সংবাদ মাধ্যমের বিকল্প উৎস হয়ে উঠছে। জাতীয় দূর্যোগ ও ক্রান্তিকাল, এমনকি খেলাধুলার আপডেট অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে আসার আগেই বাংলা ব্লগগুলোতে চলে আসছে।

গত বছর ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ এ বিডিআর বিদ্রোহের সময় বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলো অসাধারন ও অনন্য ভূমিকা রেখেছে। অনেক ব্লগারই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও ঘটনাস্থলের পাশে থেকে সামগ্রিক খবর মোবাইলের মাধ্যমে ব্লগে জানিয়েছে।
আমরা একই ধারা দেখেছি এ বছরের ২৮ জানুয়ারিতে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার রায় কার্যকরকে ঘিরে ব্লগারদের নিয়মিত আপডেট দিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের জানিয়েছেন।

সংবাদের সত্যতা নিয়ে বিতর্কঃ
অনেক সংবাদ মিডিয়াই ব্লগের এই উত্থানে ভীত হয়ে এর বিরুদ্ধে নানা অপ-প্রচার চালান। জাতির সামনে বাংলা ব্লগকে নিয়ে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছেন। তাদের যুক্তি ব্লগে অনেক সময় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা হয়। এটা কিছুটা সত্য হলেও, বহুলাংশেই মিথ্যা। যারা ব্লগিং করেন, তারা সবাই শিক্ষিত ও মার্জিত রূচীর অধীকারী। খুব সহজেই সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বুঝতে পারেন।
তাই যারা মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের প্রয়াস নিবেন, অন্য ব্লগারদ্বারা অবশ্যই ধিকৃত হবেন ও প্রতিবাদের মুখে পরবেন। তাই দ্ব্যার্থহীনভাবে, বলা যায় ব্লগে পরিবেশিত অনেক সংবাদ মিথ্যা হলেও মন্তব্য আকারে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসে।

বাংলা সাহিত্য ও কমিউনিটি ব্লগঃ
সবুজপত্র পত্রিকাকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে যে রেঁনেসার সূত্রপাত হয়েছিল, একটি অমিত সম্ভাবনাময় সাহিত্যিক গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছিল, যারা আমাদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনেক বড় উঁচুতে। বর্তমানে বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোকে কেন্দ্র করে তেমনই রেঁনেসা শুরু হয়ে গেছে। ব্লগগুলো থেকে তৈরী হচ্ছেন অনেক প্রতিভাশীল ও অমিত সম্ভাবনাময় কবি ও সাহিত্যক।

বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদী ও সাহিত্যে নব-সংযোজন লিটল ম্যাগাজিনের চর্চা চলছে। এখান থেকেও বের হয়ে আসবে অনেক প্রতিভাশালী লেখক, কবি ও সাহিত্যিক।

প্রতি বছর অমর একুশে বই মেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোতে পড়ে যায় সাঁজ সাঁজ রব।বিভিন্ন ব্লগ কর্তৃপক্ষ ও ব্লগারদের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে প্রকাশিত হয় ব্লগারদের কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের বই। এ সব পদক্ষেপই আমাদের বাংলা সাহিত্যকে নিয়ে যাবে অনেক দূর ও অনেক উচ্চতায়।

মানবিকতায় বাংলা ব্লগঃ
বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলো মানবিকতাবোধকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে। আর্ত্মামানবতার সেবায় ব্লগাররা যার যার অবস্থান থেকে সবাই নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন, এগিয়ে আসছেন।
প্রায় প্রতিটি বাংলা কমিউনিটি ব্লগে অসুস্থ ও অসহায় ব্যাক্তিদের জন্য সাহায্য চেয়ে পোস্ট আসে। কর্তৃপক্ষ সেই সব পোস্টগুলোকে দ্রুত বিবেচনা করে নির্বাচিত পোস্ট বা স্টিকি পোস্টে রাখেন সবার দৃষ্টি আকর্ষনে জন্য। ব্লগাররা যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন।

শীতার্তদের জন্য প্রথম আলো ব্লগের ব্লগারদের উদ্যোগ উল্ল্যেখ না করলেই নয়। যেখানেই মানবতা কষ্ট পায়, সেখানেই ব্লগারদের বিবেক আত্নদংশনে অস্থির করে তোলে সাহায্য করার তাগিদে।
রক্তের প্রয়োজনে যেকোন পোস্ট এলেই বা কারো অসুস্থতার খবর হলেই নিমিষেই ব্লগের পরিবেশ বদলে যায়। সবাই যার যার স্থান থেকে সাহায্যে এগিয়ে আসে।

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও হাস্পাতাল নির্মানের জন্য প্রথম আলো ব্লগের ব্লগার জোহরা ফেরদৌসীর নাম না না বললেই নয়। অনেকটা একাকী ও নিষ্ঠার সাথে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন তিনি এই সংগ্রামে।

পরিশেষে এটুকুই বলব, বাংলা ব্লগগুলো আন্তর্জালের কল্পিত গণ্ডী ছেড়ে ক্রমশ জীবন্ত হয়ে উঠছে। ব্লগাররা নিজেদেরকে সামাজিক দায়িত্ববোধ ও অনুভূতি থেকেই, বিভিন্ন কল্যানমূলক ও সেবামূলক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করছেন। আন্তর্জালিক আলাপচারীতা থেকে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হচ্ছেন একে অপরের সাথে। বিভিন্ন মীটআপ, পিকনিক, চড়ুইভাতি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। ভালোবাসা ও মানবিকতার এক অপূর্ব বন্ধন গড়ে উঠছে চারপাশে। অনেক অচেনা কেউ হয়ে যাচ্ছে, চির চেনা একজন; এখানেই বাংলা কমিউনিটি ব্লগের স্বার্থকতা।

10 comments on “সমকালীন বাংলা কমিউনিটি ব্লগ ভাবনা

  1. তাপস
    জুন 5, 2010

    আপনার লেখা থেকে সমৃদ্ধ হলাম। বাংলা ব্লগ দিবসও আছে জানতাম না।

    Like

  2. অনেক কৃতজ্ঞতা তাপস ভাই।
    শুভেচ্ছা।

    Like

  3. নিবিড়
    জুন 14, 2010

    আমি যতদূর জানি বাংলা ব্লগ দিবস টা সর্বসম্মত না, এটা নিয়ে বির্তক আছে। অনেক ব্লগ এটা পালন করে না। তাই এটাকে মনে হয় এখনো সর্বসম্মতভাবে বাংলা ব্লগ দিবস বলার সময় আসে নি। আর আপনার আলোচনা ভালই লাগল। তবে যদি সম্ভব হয় বাংলা ব্লগের বিবর্তনের ইতিহাস আর বিস্তারিত ভাবে লিখতে পারেন। কারণ আমার মতে আজ থেকে বিশ ত্রিশ বছর পর ব্লগই হয়ত প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠবে আর এখন তার বিবর্তনের ইতিহাস অন্তর্জালে তোলা থাকলে তা নতুনদের এই ব্যাপারে সমৃদ্ধই করবে।

    আর সংবাদ পরিবেশনে বাংলা ব্লগ গুলোর নতুন ধরনের ভাবনা আসলেই চমতকার। আর মিথ্যা সংবাদ নিয়ে যে অভিযোগ আছে বলে বললেন তা সময়ের সাথেই ঠিক হয়ে যাবে। কারণ সময় ধরলে কমিউনিটি ব্লগীং মাত্র বছর পাঁচেকের পুরাতন। তাই যত সময় যাবে বিবর্তনের ধারায় এটা আর সমৃদ্ধ হবে, পাঠক এবং লেখক উভয় গোষ্ঠি। পাঠকরা সময়ের সাথে আস্তে আস্তে বুঝতে পারবেন কোথায় সঠিক সংবাদ পাওয়া যাবে। এভাবেই আসলে একটা মাধ্যম পরিণত হয়ে উঠে।

    আর আপনার লেখায় আর কিছু ব্লগ আছে এদের উল্ল্যেখ দেখলাম না, যেমন-আমরা বন্ধু, ত্রিমাত্রিক, ক্যাডেট কলেজ ব্লগ, নির্মাণ ইত্যাদি। এদের পাঠক গোষ্ঠীও কিন্তু নেহাত কম নয়।

    ভাল থাকবেন।

    Like

    • সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা রাশেদ ভাই।
      আসলেই এই পোস্টটি অনেক আগের লেখা। আমারো অনেক ক্ষেত্রেই অসম্পূর্ন মনে হয়েছে। আশা করি, সময় করে কিছু বিষয় সংযোজন করব।
      আপনি ঠিকই বলেছেন, বাংলা ব্লগ দিবসটা সর্বসম্মতভাবে হয় নি। আমার ব্লগ ১ ফেব্রুয়ারি এটা পালন করে। প্রথম আলো ব্লগ অবশ্য সামহোয়ারইন ব্লগের দিবসটাকে সমর্থন দিয়েছে।
      এ ধরনের মত বিরোধ আসলেই দুঃখজনক।

      Like

  4. taufique4040
    নভেম্বর 13, 2010

    খুব বিশ্লেষনধর্মী লেখা। ভাল লাগল।

    Like

  5. রাহাত-ই-আফজা
    নভেম্বর 21, 2010

    লেখটি বেশ ভাল লাগলো।
    ” অনেক অচেনা কেউ হয়ে যাচ্ছে, চির চেনা একজন; এখানেই বাংলা কমিউনিটি ব্লগের স্বার্থকতা।”
    কথাটা পুরোপুরি সত্য।

    Like

  6. tusin
    নভেম্বর 21, 2010

    বাংলা ব্লগ সম্পকে অনেক না জানা তথ্য জানতে পারলাম।

    Like

আপনার মন্তব্য লিখুন

Information

This entry was posted on এপ্রিল 6, 2010 by in ফিচার and tagged .

নেভিগেশন